আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সমাবেশ থেকে দলটির নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের বিচার, শেখ হাসিনার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো আপস করবেন না তাঁরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে এনসিপি। দলটির শাহবাগ জোনের আয়োজনে এই কর্মসূচিতে পল্টন, মতিঝিল, রমনা, শাহবাগ এলাকার ও কেন্দ্রীয় নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘গণহত্যাকারী পলাতক আওয়ামী লীগ আবারও উঁকিঝুঁকি মারার চেষ্টা করছে। তাদের সে সুযোগ আর দেওয়া হবে না। রাজপথ জাতীয় নাগরিক পার্টির দখলে থাকবে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার, শেখ হাসিনার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো আপস নয়।’ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের জবাবে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা কারা তার প্রমাণ ৫ আগস্ট দিয়েছি, দরকার হলে আবারও দেব। আমাদের কারণেই আপনারা রাজপথে আসতে পারছেন, চাঁদাবাজি করার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশে আবারও কেউ ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ছিল, নতুন করে কেউ এলে তাদের সরাতে ১৫ মাসও সময় লাগবে না।’ এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য কোনো আইন লাগবে না। বাংলাদেশের মানুষ আর হাসিনাকে চায় না। এর জন্য কোনো আইনের প্রয়োজন নেই, সব অংশীজন চাইলেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকেও আন্তরিক হতে হবে।’ সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের কোনো দল নয়, তারা ভারতের একটি দল। তারা আরএসএস লীগ, দিল্লি লীগ। তারা বাংলাদেশে আর রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। আওয়ামী লীগ শিশুহত্যাকারী দল, চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে তারা যে গণহত্যা চালিয়েছে, এরপর আর তাদের নিষিদ্ধ করতে কোনো আইন লাগবে না।’ দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য শহীদেরা জীবন দেননি। আমরা নির্বাচনের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। আমাদের দাবি স্পষ্ট, গণহত্যার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’ এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল মাহমুদ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, জোবায়েরুল ইসলাম, ভীম্পালী ডেভিড প্রমুখ কর্মসূচিতে অংশ নেন। সমাবেশ শেষে মশালমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টন দিয়ে জিপিও মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।