জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী গুচ্ছগ্রামে একটি খাসজমির পুকুর নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ১১ জনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের মাছচাষকারী ভূমিহীনদের দ্বন্দ্ব ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। সংঘাতের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তিন শতাধিক বাসিন্দা।
প্রায় ২৪৪ শতক আয়তনের পুকুরটি ১৯৮৮ সালে গুচ্ছগ্রাম প্রতিষ্ঠার সময় ১৯টি ভূমিহীন পরিবারকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। এখানকার মানুষ মাছচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং গুচ্ছগ্রামের একমাত্র মসজিদের খরচও চলে এই আয় থেকেই। স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পুকুরটির মালিকানা দাবি করছেন এবং মাছচাষে বাধা দিচ্ছেন। এমনকি দখল না ছাড়লে 'লাশ পড়বে' বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা ও ভূমিহীন সমবায় সমিতির সদস্য আবদুল আলীম জানান, "পুকুরটি আমাদের জীবনের অংশ। এখানে মাছ চাষ করে খাই, মসজিদের খরচ চালাই। অথচ এখন প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছি।"
সমিতির সভাপতি রায়হান আলী সরদার বলেন, "পুকুরটি ২৪৪ শতক হলেও তারা ৩৪৪ শতক দেখিয়ে ভুয়া দাবি করছে। আমাদের কেউ বেঁচে থাকা পর্যন্ত পুকুর ছাড়ব না।"
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মালিকানা দাবিদার মতিউর রহমান বলেন, “আমি এই পুকুরে মাছচাষ করতাম। এখন মামলা চলছে।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান আক্কেলপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুনিরা সুলতানা। তিনি বলেন, “পুকুরটি গুচ্ছগ্রামের দখলে আছে। এটি আগে এমআরআরসি হিসাবে খাসজমি ছিল। বর্তমানে ৭৬ শতক খাস রয়েছে, বাকি অংশ কীভাবে খাস তালিকা থেকে বাদ পড়ল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম জানান, “ভূমিহীনদের জীবনমান উন্নয়নের জন্যই খাস পুকুর বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।”