বুধবার (২৮মে) রাতে নওগাঁ সদর উপজেলার আনন্দনগর বাবু বাজার এলাকায় নেশাগ্রস্থ স্বামীর দেশীয় অস্ত্রের (হাসুয়া) এলোপাতাড়ি আঘাতে স্ত্রী গুরুত্বর আহত হয়েছে। এসময় স্ত্রীর একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া একাধিক স্থানে গভীর জখমের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ওই স্ত্রী রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এমন নির্মম ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে স্বামী সুমনকে (৩২) গণপিটুনি দিলে তার মৃত্যু হয়। সুমন নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের দুবলহাটি গ্রামের বাবু সরদারের ছেলে। সুমন পেশায় একজন গৃহনির্মাণ শ্রমিক ছিলেন।
স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩-৪ বছর আগে শহরের আনন্দনগর এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে ময়ূরী (২৪) এর সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রীর সঙ্গে আনন্দনগর এলাকায় শ্বশুরবাড়ীতে থাকতেন। সুমন বিভিন্ন সময় নেশাগ্রস্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করতেন এবং স্ত্রীকে সাংসারিক কোন খরচ দিতেন না। বুধবার (২৮ মে) রাতে সাড়ে ৮টার দিকে মাদকাসক্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করেন। ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে হাসুয়া দিয়ে স্ত্রীর গলা এবং হাতে কোপ দেন। এতে স্ত্রী ময়ূরীর বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমন নির্মম ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয়রা সুমনকে গণপিটুনী দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিলে ময়ূরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় এবং সুমনকে মৃত ঘোষণা করে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। পুলিশ আহত অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। স্থানীয়দের গণপিটুনীতে স্বামী সুমন মারা গেছে। সুমনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়ূরীর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ যোগাযোগ করেনি। মরদেহ নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি।