তেমনি একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ.ম.জুলফিকার তারেক। তিনি কিনেছেন অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট। একজন সরকারি চাকরিজীবী কেন বিদেশি পাসপোর্ট কিনলেন? তার আগে কিনেছেন অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি। ইংল্যান্ড ভিত্তিক বাংলা সংবাদ মাধ্যম নেকড়ে নিউজের অনুসন্ধানে জানা যায় ২০১৮ সাল থেকে জুলফিকারের স্ত্রী, শাশুড়ী, সন্তান সহ অস্ট্রেলিয়ায় নিজস্ব বাড়িতে থাকেন। তার স্ত্রী বছরে ৫ থেকে ৭ বার দেশে আসেন। তারা অস্ট্রেলিয়ায় কোন চাকরি বা ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। তারা বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে গিয়ে সেখানে জীবন যাপন করে। তাহলে জুলফিকার তারেকের এত টাকার উৎস কি? তাহলে কি তিনি যেকোন সময় দেশ ছাড়তে পারেন?
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ.ম.জুলফিকার তারেকের টাকার উৎসের সন্ধানঃ
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলাকে ব-দ্বীপ দেখিয়ে সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর যোগসাজশে প্রায় ১২শ কোটি টাকার প্রকল্প ভাগিয়ে নিয়ে লুটপাট করেছে। যার অন্যতম সহযোগি পটিয়া সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খ.ম.জুলফিকার তারেক। তিনি সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর আস্থাভাজন হওয়ায় জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে নিয়ম ভঙ্গ করে প্রভাব খাটিয়ে পটিয়া সেচ প্রকল্পে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
গেল বছরের ৫ আগস্ট দেশে অভ্যুত্থান হলো। স্বৈরাচার হাসিনা সহ তার দল দেশ ছেড়ে পালালো। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসর লুটপাটের সহযোগী পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটিয়া সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খ.ম.জুলফিকার তারেক এখনো ওই প্রকল্পে লুটপাটের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বহাল তবিয়তে থেকে আওয়ামী সিন্ডিকেট দিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে এই প্রকল্পের কমিশন এখনো যাচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসর সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর কাছে। একই সাথে কমিশনের ভাগ পাচ্ছেন এই লুটেরা আমলা।
অভ্যুত্থানের আগে তার অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তার ক্ষমতার দাপটে সেই তদন্ত গায়েব হয়ে যায়। তিনি যেভাবে লুটপাট চালাতে চেয়েছেন সেভাবেই কাজ হয়েছে প্রকল্পে। জমি অধিগ্রহণের টাকা দিতে অনিয়ম, নিম্ন মানের কাজ, কাজের শর্ত ভঙ্গ, সহ এমন কোন অনিয়ম নেই প্রকল্প পরিচালক জুলফিকার করেননাই।
কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী পটিয়া সেচ প্রকল্পে অনিয়ম লুটপাট নিয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে কি কি অনিয়ম পাওয়া গেছে? সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন কোন তদন্ত রিপোর্ট দেয়নি তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের কাছে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানতে চেয়ে ব্যর্থ হয় নেকড়ে নিউজ। তিনি কোন উত্তর দেননি। তাহলে কি জুলফিকার তারেকের ক্ষমতার দাপট এখনো চলে? তার ক্ষমতার উৎস কোথায়? তিনি কিভাবে এখনো প্রকল্প পরিচালক থাকেন? তার এত অনিয়মের পরও কিভাবে তদন্ত রিপোর্ট গায়েব হয়? সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় নজর দেবে কি?
অন্যদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলমের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শতকোটি টাকার জমি নামমাত্র মুল্যে বরাদ্দ দিয়েছেন তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার তারেক। বাঁশখালীতে এস আলমের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের বেশিরভাগ জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের। যার বিনিময়ে এস আলম থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছেন তিনি।
বিদেশী পাসপোর্ট ক্রয়, অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি ক্রয়, গেল ছয় বছর যাবৎ স্ত্রী, শ্বাশুড়ি, সন্তান সহ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস, পটিয়া সেচ প্রকল্পে অনিয়ম, এস আলমকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার জমি নাম মাত্র মূল্যে দিয়ে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ.ম.জুলফিকার তারেকের সাথে হোয়াটস অ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।