জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলগেট সংলগ্ন আরএনবি নামক একটি ইটভাটার গরম ধোঁয়ায় মাঠের বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঘটনায় কৃষকদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ৯৫ জন কৃষকের হাতে ৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৭০ টাকা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেন। এসময় সদর উপজলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), রাজীব কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মাশরেকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরমান আলী হিরো প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূরানাপৈল এলাকার আরএনবি নামে একটি ইটভাটার ধোঁয়ায় মাঠের বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা ক্ষতিপুরণের দাবিতে গত ২৭ এপ্রিল বিকেলে জয়পুরহাট-পাঁচবিবি সড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ইউএনও, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, পুরানাপৈল ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পরে ইউএনওর আশ্বাসের পর কৃষকেরা সড়ক ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় ইউএনও রাশেদুল ইসলাম তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্ষতিপূরণ নির্ণয় করে ইউএনও'র কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ইটভাটার মালিক প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপুরণের টাকা জমা দেন। মঙ্গলবার সেই টাকা কৃষকদের বিতরণ করা হয়।
পুরানাপৈল বড়তাজপুর এলাকার কৃষক আজাদুল বলেন, এক বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার ধান বিক্রি হয়। সেখানে অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমরা ফসলি মাঠে ইটভাটা চাই না।
পুরানাপৈল গতনশহর এলাকার কৃষক মশিউর রহমান বলেন, আমার ১৫ শতক জমির ধানখেত নষ্ট হয়েছে। আমাকে ১ হাজার ৮০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আমার পাশের জমির মালিকেরা প্রতি বিঘাঢ ৭ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা পেয়েছেন।
পুরানাপৈল ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরমান আলী (হিরো) বলেন, ইটভাটার গরম ধোঁয়ায় মাঠের বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণ করেছে প্রশাসন। আগেই একইভাবে ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। ফসলি মাঠে ইটভাটা না থাকা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
ইউএনও রাশেদুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি ৯৫ জন কৃষকের ৯১ বিঘা জমির বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্থ ও ৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৭০ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ণয় করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। সেই অনুযায়ী ৯৫ জন কৃষককে সেই টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ইটভাটার লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নবায়ন থাকায় অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অধিকতর তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবরবতীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন