পর্ব-১
বিশেষ প্রতিবেদক, নেকড়ে নিউজঃ প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান (৫ আগস্টের পূর্বে)। তখন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নদভী ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ড পুনর্গঠন হলে তাকে সদস্য করা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের যাকাতের বড় একটি অংশ কাজী দ্বীন মোহাম্মদের হাত ধরেই বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম এবং মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর হাত ধরেই তিনি যাকাতের ফান্ড সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করেন। সেই যাকাতের টাকা গুলো তিনি তার নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন এবং এনজিও সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করেন।
যাকাতের ফান্ড সংগ্রহের জন্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে যাতায়ত করেন। নেকড়ে নিউজের হাতে আসা গেল পাঁচ বছরে তার বিদেশ যাতায়তের তথ্য পর্যালোচনা করতেই বেড়িয়ে আসে লোমহর্ষক তথ্য। ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত তিনি গত পাঁচ বছরে বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউন্জ ব্যবহার করে পাকিস্তান, ভারত, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, সৌদিআরব ও ওমান সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাতায়ত করেছেন ৩৩ বার । তার সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বর্তমানে ছাত্র হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা ড. আবু রেজা নদভী। কাজী দ্বীন মোহাম্মদ প্রতিবারই নামী-বেনামী পাসপোর্টে বিদেশগমন করেন বলে নিশ্চিত হয়েছে নেকড়ে নিউজ। ইমিগ্রেশনের তথ্য বলছে, কাজী দ্বীন মোহাম্মদ গত পাঁচ বছরে ৩৩ বার বিদেশ যাত্রায় নামী-বেনামী মোট ছয়টি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন। একটি তার নিজের । অন্যপাঁচটির দুটি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা আহমদুল হক ও স্টোর ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম রফিকের এবং বাকী তিনটি ( BE02...32, B007...59, EE04...39) তার সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের। পাসপোর্টে স্টোর ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম রফিকের বর্তমান ঠিকানা “কেএল” মালেশিয়া উল্লেখ থাকলেও তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে চাকরিরত আছেন। অন্যদিকে পাসপোর্টে তার স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে নারায়ণগন্জ। যেখান থেকে কিছুদিন আগে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন অরসা প্রধান আতাউল্লা জুনুনী গ্রেফতার হয়।
বেনামী পাসপোর্টে বিদেশ ভ্রমণে দেশের নিরাপত্তা এবং দেশবিরোধী কোন কর্মকান্ডে যুক্ত থাকতে পারেন কিনা জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অবঃ) এমদাদুল হক বলেন, ব্যাপারটা সত্য হলে এটি অবশ্যই ভাল উদ্দেশ্যে করা হয়নি। বেনামী পাসপোটে বিদেশে যাতায়াত শুধু দেশের নিরাপওা নয়, অথনীতির জন্যও হুমকি।
কিভাবে অন্যের পাসপোর্টে বিদেশ গেলেন এবং কেন গেলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী দ্বীন মোহাম্মদ তার পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় তা পুরোপেরি অস্বিকার করেন। এসব মিথ্যা নাটক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।