বাংলাদেশে টেলিটক একটি সরকারি মোবাইল অপারেটর হিসেবে কাজ করছে, যার গ্রাহক সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। অনেক সময় দেখা যায়, গ্রাহক নিজেই নিজের মোবাইল নম্বর ভুলে যান কিংবা নতুন সিম কিনলে নাম্বারটি মনে রাখতে সমস্যা হয়। এই প্রতিবেদনে আমরা টেলিটক নাম্বার দেখার সহজ ও কার্যকর উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
টেলিটক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড ২০০৪ সালে চালু হয়। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর, যা মূলত সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। অন্যান্য বেসরকারি অপারেটরের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে টেলিটকও ডিজিটালাইজেশনের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
নাম্বার দেখার প্রয়োজনীয়তা:
১. নতুন সিম কিনলে নাম্বার মনে রাখা কঠিন হয়।
২. মোবাইল নম্বর শেয়ার করার প্রয়োজনে সহজে জেনে নেওয়া দরকার।
৩. অনেক সময় ফর্ম পূরণ, রিচার্জ বা বিকাশ/নগদে লেনদেনের জন্য নিজের নাম্বার জানা জরুরি হয়ে পড়ে।
নাম্বার দেখার উপায়:
১. ইউএসএসডি (USSD) কোড ব্যবহার করে:
টেলিটক নম্বর দেখার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ইউএসএসডি কোড। নিচের পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন:
মোবাইলের ডায়াল প্যাডে যান
টাইপ করুন *551#
কল করুন
স্ক্রিনে আপনার মোবাইল নম্বরটি প্রদর্শিত হবে
এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবা এবং তাত্ক্ষণিকভাবে নম্বরটি জানা যায়।
২. টেলিটক অ্যাপ ব্যবহার করে:
টেলিটকের "My Teletalk" অ্যাপ ব্যবহার করেও নিজের নাম্বার জানা যায়। পদ্ধতিটি নিচে দেওয়া হলো:
Google Play Store বা Apple App Store থেকে “My Teletalk” অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অ্যাপে লগইন করুন বা একাউন্ট তৈরি করুন
হোমপেজেই আপনার মোবাইল নাম্বার দেখা যাবে
৩. এসএমএস-এর মাধ্যমে:
যদিও সরাসরি এসএমএস পাঠিয়ে নাম্বার জানা যায় না, তবে অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স বা অফার চেক করার সময় নাম্বার দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ:
টাইপ করুন: P
পাঠান 154 এ
ফিরতি মেসেজে আপনার নাম্বার সহ প্রোফাইল তথ্য আসবে
৪. টেলিটক কাস্টমার কেয়ার:
যদি আপনি উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে না পারেন, তাহলে সরাসরি টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার হেল্পলাইন ১২১ এ কল করে সহায়তা নিতে পারেন। সেখানে আপনার সিম নম্বর বা অন্য তথ্য দিয়ে সহজেই আপনার মোবাইল নম্বর জানতে পারবেন।
৫. মোবাইল ফোন সেটিংস (সীমিত কার্যকারিতা):
কিছু অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্টফোনে “Settings > About phone > Status” অপশনে গিয়ে "My Phone Number" দেখা যায়। তবে অনেক সময় এটি ফাঁকা থাকে, তাই ইউএসএসডি বা অ্যাপ বেশি নির্ভরযোগ্য।
সতর্কতা:
ইউএসএসডি কোড টাইপ করার সময় ভুল করবেন না।
নাম্বার দেখা যাওয়ার পর সেটি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করুন।
নিজের নাম্বার অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করার সময় সচেতন থাকুন।
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি ও টেলিটক:
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে টেলিটক ই-গভর্নেন্স, ৫জি পরিষেবা এবং রিমোট এরিয়াতে ইন্টারনেট সংযোগে কাজ করছে। ভবিষ্যতে গ্রাহকসেবাকে আরও সহজ করতে নতুন প্রযুক্তি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক হেল্প ডেস্ক বা সেল্ফ-সার্ভিস বুথ। নিজের টেলিটক মোবাইল নম্বর জানার বিষয়টি খুব সাধারণ হলেও অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। ইউএসএসডি কোড, মোবাইল অ্যাপ এবং অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই এই তথ্য জানা যায়। টেলিটক তাদের গ্রাহকদের জন্য যেসব সুবিধা প্রদান করছে, সেগুলো জানার মধ্য দিয়ে আমরা আরও সচেতনভাবে মোবাইল প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারি।
মন্তব্য করুন