Nekre News
প্রকাশঃ 23-এপ্রিল-2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

কালাইয়ে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

মোঃ মোকাররম হোসাইন কালাই জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

গ্রামের নিপুণ কারিগরদের হাতে তৈরি মাটির জিনিসের কদর ছিল অনেক বেশি। বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো মাটির তৈরী জিনিসপত্র।
বাঙ্গালীর নানা উৎসব ও পূজা-পার্বণ যেমন- গায়ে হলুদ, সুন্নতে খৎনা, বিয়ে, জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, নবান্ন, পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুনের মতো নানা উৎসবে ব্যবহার হতো মাটির তৈরি তৈজসপত্র। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার আগ্রাসন এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রতি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অনীহার কারণে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে কালাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।  
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,এ উপজেলার একমাত্র কুমারপাড়া হিসেবে পরিচিত মহেশপুর গ্রাম মাটির তৈরি আসবাবপত্র তৈরির কাজে নিয়োজিত গুটিকয়েক মৃৎশিল্পীদের সবাই কুমার সম্প্রদায়ের। একসময় এই পাড়া মৃৎশিল্পের জন্য খুবই খ্যাতি অর্জন করলেও মাটির জিনিসপত্রের প্রতি প্রতিনিয়ত মানুষের আগ্রহ কমে যাওয়ায় অনেক পুরোনো শিল্পীরাও পেশা বদল করছেন। আর অনেকেই বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই চান না তাদের সন্তানরা এ পেশায় আসুক। ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে যেন ভালো চাকরি করতে পারে। অনিশ্চিত জীবনের দিকে সন্তানদের দিতে চান না তাঁরা।
এদিকে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে জায়গা করে নিচ্ছে আধুনিক প্লাস্টিক, সিরামিক, সিনথেটিক, ধাতব, কাচ ও ম্যালামাইনের বিভিন্ন সামগ্রী। যার কারণে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদাও দিনকে দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। 
তবে নির্মম বাস্তবতার সঙ্গে যুদ্ধ করে এই গ্রামের এখনো প্রায় ৪০টি কুমার পরিবার ধরে রেখেছেন বাপ-দাদার এই মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য।
শ্রী সুনীল চন্দ্র পাল বলেন, ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে মাটির এসব জিনিসপত্র বানানো শিখেছি। একসময় এগুলোর অনেক চাহিদা ছিল। এখন চাহিদা নেই বললেই চলে। মাটির বিভিন্ন জিনিস বানাতে অনেক খরচ হয়। এজন্য সরকার থেকে মাসিক ভাতা ও সহজ শর্তে ঋণ দিলে আমরা ঠিকমতো কাজ করতে পারতাম।
এ উপজেলার প্রবীণ মৃৎশিল্পী গুরুচরণ পাল 
বলেন, বাপ-দাদার এই পেশা টিকিয়ে রাখতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বগতি। সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে পারবো। আর না-হলে এই পেশা ছেড়ে দেয়া ছাড়া উপায় নেই। 
শ্রী নীরেন চন্দ্র পাল বলেন, এখন বাজারে সব কিছুর দাম বেশি। আগেকার দিনে আমরা বিভিন্ন পুকুর থেকে মাটি সংগ্রহ করে কাজ করেছি। আর এখন মাটি, বালু কিনতে হয় এছাড়াও রঙের দাম বেশি। কারণে খুব একটা লাভ হয়না। সরকারিভাবে আমাদের তেমন সহযোগিতাও করেনা। আমাদেরকে সহযোগিতা করলে আমরা এ পেশাকে ভালোভাবে টিকিয়ে রাখতে পারবো।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন,লোকজ সংস্কৃতি রক্ষা ও স্থানীয় মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে সৃজনশীল, দৃষ্টিনন্দন কাজের জন্য প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজনের মাধ্যমে এই শিল্পের বাজার সম্প্রসারণে আমরা কাজ করব।মৃৎশিল্পকে ঘিরে এমন উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে যেমন ভূমিকা রাখবে, তেমনি সংরক্ষিত থাকবে বাংলার সাংস্কৃতিক। 


মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৫ জুলাই জয়পুরহাটে আসছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা

1

সুবিধাভোগী নির্ধারণে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

2

দুপচাঁচিয়ায় দুঃস্থদের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ

3

পাঁচবিবিতে ৫০ বছর ধরে বেদখলে থাকা সরকারি রাস্তা এসিল্যান্ডে

4

কানে হেডফোন দিয়ে হাঁটছিলেন যুবক, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু

5

জয়পুরহাটে আলোচিত ছাত্রদল নেতা হত্যা: আরও ৩ জন গ্রেপ্তার

6

জয়পুরহাট পৌরসভার দোকান/ অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি, প্রতিবাদে দো

7

নওগাঁ সীমান্তে টিকটক করতে গিয়ে বিএসএফের হাতে দুই কলেজ ছাত্র

8

শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম ও একতার স্মারক মহান মে দিবস আজ

9

কৃষিবিদ মোঃ লুৎফর রহমানের পদোন্নতি জনিত বিদায় অনুষ্ঠান

10

আক্কেলপুরে জীবন ঝুঁকিতে ২’শ শিশু শিক্ষার্থী

11

পোরশায় গরু চোরসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক

12

পোরশায় আওয়ামী লীগ নেতা সুদেব সাহা আটক

13

বাংলাদেশের মাদ্রাসায় প্রযুক্তিশিক্ষা চালু করতে কাতার চ্যারিট

14

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে কলম ও ফুল বিতরণ করলো

15

জয়পুরহাটে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৭৯ জনের মাঝে চেক বিতরণ

16

বেতন নেই, তবু শিক্ষা থেমে নেই — চরম সংকটে জয়পুরহাটের দারুল আ

17

কালাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু

18

পাবনায় পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের বীমাদাবীর ২ কোটি ৫৮ লক্ষ ট

19

জয়পুরহাটে তালগাছ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু

20