দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সহকারী শিক্ষকদের শুরুর বেতন গ্রেড হবে ১২তম এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেডে উন্নীত করা হবে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদের নেতৃত্বে ‘প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গঠিত পরামর্শক কমিটির’ সুপারিশ ও আদালতের রায়ের আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে চেকলিস্ট অনুযায়ী নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
তবে নতুন উদ্যোগকে ঘিরে শিক্ষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ভিন্নমত। সহকারী শিক্ষকরা বলছেন, তাঁরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। তাঁদের দাবি, শুরুর বেতন গ্রেড অন্তত ১১তম করতে হবে। এ দাবিসহ তিন দফা দাবিতে তাঁরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকরা আদালতের নির্দেশনা অনুসারে তাঁদের ১০ম গ্রেডের বেতন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা সর্বসাধারণের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমান উদ্যোগ কেবল রিট মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের সব প্রধান শিক্ষকের জন্য কার্যকর হওয়া উচিত।
বর্তমানে দেশের প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে চার লাখ শিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন গ্রেড ১৩তম এবং প্রধান শিক্ষকদের ১১তম।
পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, ভবিষ্যতে ‘সহকারী শিক্ষক’ পদ বিলুপ্ত করে সরাসরি 'শিক্ষক' পদ চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে শুরুতে ১২তম গ্রেডের বেতন পাবেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা। চাকরির দুই বছর পর স্থায়ীকরণ এবং আরও দুই বছর পর পদোন্নতি পেয়ে 'সিনিয়র শিক্ষক' হওয়া যাবে, তখন বেতন হবে ১১তম গ্রেডে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার পর বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য।
সরকারের এই উদ্যোগ একদিকে যেমন শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির আংশিক প্রতিফলন ঘটাতে চলেছে, অন্যদিকে শিক্ষকদের কিছু অংশের মধ্যে নতুন অসন্তোষও জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য করুন